Type Here to Get Search Results !

#Advertisement

স্বামী বিবেকানন্দের জন্ম ও বিস্তার উপদেশাবলী।

 স্বামী বিবেকানন্দ 

স্বামী বিবেকানন্দ বাংলা ১২৬৯ খ্রিঁঃ (১৮৬৩ ইং) পৌষ মাসে ভারত বর্ষের সিমলার বিখ্যাত দত্তবাড়ি জন্ম গ্রহন করেন। তাহার নাম রাখা হয় বীরেশ্বর, ডাকনাম বিলে। অন্নপ্রাশনের সময় তার নাম রাখ হয় নরেন্দ্রনাথ,পরবর্তীকালে তিনি স্বামী বিবেকানন্দ নামে পরিচিতি লাভ করেন।

স্বামী বিবেকানন্দ ভাল গান জানিতেন। গানের পাগল শ্রী রামকৃষ্ণ দেব মাঝে মর্ধ্যে তাকে ডাকিয়া উপদেশ বাণী প্রদান করিয়া ভবিষ্যতের জন্য প্রস্তুত করতেন শ্রীরামকৃষ্ণ সহচর্য পাইয়া তিনি হইয়া উঠলেন সংসার বিবাগী অধঃপতিত মানুষের জন্য তাহার মন কাঁদিয়া উঠিল। শ্রীরামকৃষ্ণ তিরোধান এর পূর্বে স্বামী বিবেকানন্দকে ডাকিয়া বেশ কিছু উপদেশ বাণী দিয়া গেলেন। পথভ্রান্ত অসহায় দুঃখী মানুষের দায়-দায়িত্ব স্বামী বিবেকানন্দকে দিয়া গেলেন। 1887 খ্রিস্টাব্দে প্রথম দিকে শ্রীরামকৃষ্ণ সন্তান দল চির পবিত্র বিরজা হোম অনুষ্ঠান করিয়া সন্ন্যাস ধর্ম গ্রহণ করিলেন।

স্বামী বিবেকানন্দ তাঁর বাণী পৃথিবীর বিভিন্ন স্থানে ঘুরিয়া ঘুরিয়া প্রচার করতেন। তিনি আমেরিকার নিউইয়র্ক শহরে বেদান্ত সোসাইটি প্রতিষ্ঠা করেন। আমেরিকার জ্ঞানীগুণী ব্যক্তি বর্গ তাকে অভিনন্দন

জানান। আমেরিকার শিকাগো শহরে একটি অনুষ্ঠানে তিনি অনাহুত অবস্থায় যোগদান করেন। লম্বা আলখেল্লা পরা স্বামীজি যখন আমার আমেরিকার ভাইবোনেরা বলিয়া সম্মোধন করিলেন তখন সকলের চমক ভাংলো তিনি বক্তৃতা দিয়ে দেখাইলেন যে কোন ধর্মে পার্থক্য নাই। পরদিন আমেরিকার বড় বড় কাগজে স্বামীজীর গুণকীর্তন আরম্ভ হইল অধঃপতিত স্বদেশবাসী তখন স্বামীজীকে চিনিতে শুরু করলো সেবাধর্মে উদ্বুদ্ধ কর্মীদের স্থায়ীভাবে পরিচালনার জন্য তিনি 1897 খ্রিস্টাব্দে রামকৃষ্ণ মিশন প্রতিষ্ঠা করেন।

 1898 খ্রিস্টাব্দে ডিসেম্বরে সংঘের প্রধান কেন্দ্র বেলুড় মঠ স্থাপিত হয় । স্বামীজি দেশবাসীকে বলিলেন স্বার্থ ত্যাগ ও সেবাই আমাদের জাতীয় আদর্শ। অপরের কল্যাণ আকাঙ্খাই নিঃস্বার্থভাবে আত্মনিয়োগ করলে নিজেরই অশেষ কল্যাণ।

জীবে প্রেম করে যেই জন -- সেই জন সেবিয়াছে ঈশ্বর। নিঃস্বার্থভাবে মানুষকে নারায়ণ জ্ঞানে সেবা করিলে চিত্তের মালিন্য দূর ইইবে। ক্রমে ঐক্যান্তিক মুক্তি করায়াত্ত হইবে।

 স্বামীজির বাণী

১। পাপী পাপী কি বলিতেছ? মানুষকে পাপী বলাই তো মহাপাতকের কাজ।

২। চালাকীর দ্বারা কোন মহৎ কার্য্য হয় না।প্রেম, সত্যানুরাগ ও মহাবীর্য্যের সহায়তায় সকল কাজ কার্য্য সম্পন্ন হয়।

৩। ত্যাগ- ত্যাগ -ত্যাগ-- ইহাই যেন তোমার জীবনের মূলমন্ত্র হয়।

৪।জগতে আজ সেইরূপ লোকদের প্রয়োজন,-- যাহাদের জীবন প্রেম-প্রদীপ্ত-- যাহারা সম্পূর্ণ স্বার্থশূণ্য, পরোপকারই জীবন, পরহিত চেষ্টার অভাবই মৃত্যু।

৫। জনসেবার চাইতে আর ধর্ম নাই।

৬। মানুষের ভিতর যে পূর্ণত্ব প্রথম হইতেই বর্ত্তমান, তাহারই প্রকাশ সবধনকে বলে শিক্ষা।

৭। যে শিক্ষা মানুষের চরিত্রবল,পরার্থপরতা,সাহসিকতা আনিয়া দেয় না, সে কি আবার শিক্ষা? যে শিক্ষা জীবনে নিজের পায়ের উপর দাঁড়ানো শেখায়, সেই হইতেছে শিক্ষা।

৮। মানুষের কল্যাণ স্ত্রীজাতির অভ্যুদয় না হইলে সম্ভবপর নয়। সেইজন্যই সামকৃষ্ণ অবতারের স্ত্রীগুরু গ্রহণ, সেইজন্যই নারীভাব সাধন, সেইজন্যই মাতৃভাব প্রচার, সেইজন্যই আমার স্ত্রীমঠ স্থাপনের প্রথম উদ্যেগ।

ভারতে হিন্দু সমাজের অধপতনের কারণ 

১। অনভিজ্ঞ সমাজ সংস্কারক,

২। অপর জাতি হইতে বিচ্ছিন্ন থাকা,

৩। ঈর্ষা, ঘূণা ও সন্দিগ্ধ-চিত্ততা,

৪। দরিদ্র জনসাধারণকে অবজ্ঞা,

৫। ধর্ম শিক্ষার অনুসরণ না করা,

৬। অন্ধ অনুকরণ ও দুর্বল আশা- আকাঙ্ক্ষা,

৭। বাল্য-বিবাহ,

৮। বিষয় বুদ্ধির অভাব,

৯। ব্যক্তিত্ব নষ্ট,

১০। ভালবাসা ও সহনুভুতির অভাব,

১১। শিক্ষার অভাব,

১২। সঙ্কীর্ণতা,

১৩।  সামাজিক অত্যাচার,

১৪। স্ত্রীজাতির অসম্মান,

১৫। স্বাধীন চিন্তার অভাব,

 হিন্দু সমাজের পূর্নজাগরণের উপায়

১। অহংকার, ঈর্ষা, ভয় ও শৈথিল্য ত্যাগ।

২। চিন্তা ও কার্য্যে স্বাধীনতা।

৩। ত্যাগ সেবা ও আজ্ঞবহতা।

৪। দরিদ্র সাধারনের উন্নতি বিধান।

৫। ধর্মউপদেশ অনুযায়ী  জীবন যাপন ও প্রচার।

৬। পবিত্রতা, সহিষ্ণুতা,  অধ্যবসায় ও দৃঢ়বিশ্বাস।

৭। পরোপকার স্পৃহা ও সহযোগিতা।

৮। বিদেশ ভ্রমন ও অপর জাতির সঙ্গে সংস্রবণ।

৯। ব্যাক্তিত্ববোধ জাগতিকরণ।

১০। ভগবানের সাহায্য প্রার্থনা ও ব্রত গ্রহন।

১১। শ্রীরাম কৃষ্ণের শিক্ষার অনুসরণ।

১২। শিক্ষা বিস্তার।

১৩। সংঘবদ্ধ হওয়া।

১৪। সত্য, প্রেম ও অপকটতা।

১৫। সমাজ ব্যবস্থার উন্নতি সাধন।

১৬। সাহসী,উৎসাহী, চরিত্রবান ও শ্রদ্ধাসম্পন্ন কর্ম্মীর প্রয়োজন।

১৭। স্ত্রীশিক্ষা ও স্ত্রীজাতিকে সম্মান।

১৮। বৈজ্ঞানিক আবিষ্কার। 

 ধর্মনুরাগে, অনুষ্টানে নহে; হৃদয়ের পবিত্র ও অকপট প্রেমই ধর্ম।মানুষের ভিতর যে দেবত্ব প্রথম হইতেই বর্ত্তমান তাহার প্রকাশ সাধনকেই ধর্ম্ম বলে। জ্ঞানলাভের একমাত্র উপায় একাগ্রতা। শ্রদ্ধাবান হও বীর্য্যবান হও, আত্নজ্ঞান লাভ করে,আর পরহিতে জীবনপাত কর--এই আমার ইচ্ছা ও আর্শীবাদ

 

 

 

 

 

 


Tags

Post a Comment

0 Comments
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.

Top Post Ad

Below Post Ad

Ads Area