জগতের বিভিন্ন ধর্ম্ম আলোচনা করিলে দেখা যায় যে, প্রত্যেক ধর্ম্মেরই মূলনীতি এক। প্রত্যেক ধর্ম্মই প্রচার করিয়াছে সত্য, প্রেম, পবিত্রতা, স্রষ্টার এবাদাত ও সৃষ্টের সেবা।
ইসলাম ধর্ম্ম বলে, "সৃষ্টের সেবাই স্রষ্টার সেবা যেহেতু সৃষ্টের মধ্যে স্রষ্টার রূহ বিদ্যামান।"
বৈষব ধর্ম্ম বলে, "জীবে প্রেম করে যেইজন সেইজন সেবিয়াছে ঈশ্বর।"
পার্সিক ধর্ম্ম বলে, "পরদুঃখকারী ব্যাক্তিই স্রষ্টার প্রিয়পাত্র"
খৃষ্টধর্ম্ম বলে "যাহারা সবার শান্তি কামনা করে, তাঁহারা ই ঈশ্বরের প্রকৃত সন্তান ইত্যাদি।"
প্রত্যেক ধর্ম্মের মূখ্য উদ্দেশ্য হইতেছে স্রষ্টার সান্নিধ্য ও সন্তুষ্টি লাভ করিতে হইলে উপাসনার ও প্রয়োজন। প্রায় প্রত্যেক ধর্ম্মে উপাসনার নির্দ্দেশ আছে। কিন্তু উপাসনার ধারা বিভিন্ন ধর্ম্মে বিভিন্ন রকম, কেহ সকার উপাসনা করেন, কেহ নিরাকার উপাসনা করেন।
পার্সিকেরা অগ্নির মাধ্যমে পূজা করিয়া থাকেন। শ্রীরামকৃষ্ণ বলেন যে,তাঁহারা মূর্ত্তিকে পূজা করেন না।মূর্ত্তিকে সামনে রাখিয়া পরমেশ্বরকে ধ্যানে পূজা করিয়া থাকেন, শ্রী শ্রী চৈতন্যদেব নৃত্য করিয়া উচ্চঃস্বরে হরি নাম গাইয়া ঈশ্বরের পূজা করেন।
চৈতন্যদেব বলেন, ঈশ্বরের-প্রেমে বিভোর হইয়া নৃত্যকরত উচ্চঃস্বরে চোখের জল দিয়া হরিকে ডাকিলে তাঁহার সন্ধান মিলে।
ইসলাম ধর্ম্ম বলে, স্রষ্টার সাথে সৃষ্টের dircet সম্বন্ধ। এবাদাতের সময় আল্লাহকে হাজের নাজের মনে করিয়া এবাদাত করিত হইবে।
অন্যান্যা ধর্ম্মে ধ্যান করিবার প্রথা আছে। ইসলাম ধর্ম্মে ও আছে মোরাকাবা। মোরাকাবার সময় চোখটি বন্ধ করিয়া, নিস্পন্দ হইয়া মনে করিতে হইবে স্বয়ং আল্লাহতা'য়ালা তাহার সামনে আসীন আছেন। তখন আল্লাহ ও আশেকেতে কোন তফাত থাকিবে না। আশেক ক্ষণেকের জন্য নিজের হাস্তিজ্ঞান লুপ্ত করিয়া মহাপ্রভুর সাথে মিশে এক হইয়া যাইবে। ইসলাম সার্ব্বজনীন ধর্ম্ম।
প্রত্যেক কালের প্রত্যেক মানুষের কাছে শ্রদ্ধা পাইয়া আসিয়াছে। ইসলামে কোন গোড়ামী নাই।পৃথিবীর বড় বড় মনীষীরা ইসলাম কে অনেক উচ্চস্থান দিয়াছেন। গুরু নানক- ইসলাম ধর্ম্মকে শ্রদ্ধার চোখে দেখিতেন ও দাড়ি রাখিতেন।
ইসলামী আইন-কানুন মানিতেন। রাজা রামমোহন রায়- কোরআন তেলাওয়াত করিতেন। ইসলাম আল্লাহর খাস মনোনীত ও পূর্ণত্বপ্রাপ্ত ধর্ম্ম। আল্লাহ তাহার পাক কোরআনে বলিয়াছেন যে, "হে মোহাম্মদ (সাঃ)! ইসলাম কে তোমার জন্য পূর্ণ করিয়া দিলাম।" ইসলাম জগতের বুকে আসিয়াছে এক মহাসম্পদ আল-কোরআন নিয়া। আল্লাহর কোরআন আর তাহার রাছুলের বাণী-- সমগ্র কালের, সমগ্র জগতবাসীর জন্য কল্যাণকর।